শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টার্কিশ এয়ারের অসহযোগিতায় পালিয়েছে ৩ সন্দেহভাজন

টার্কিশ এয়ারের অসহযোগিতায় পালিয়েছে ৩ সন্দেহভাজন

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ইউক্রেনের তিন নাগরিক ঢাকা ছেড়েছেন। তাদের নাম শেরি, রোমান ও দিমিত্রি। মামলার তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র বলছে, টার্কিশ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতায় এই তিন সন্দেহভাজন পালিয়ে যায়।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ইউক্রেনের ছয় নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদে একই দেশের সন্দেহভাজন আরও তিনজনের নাম উঠে আসে। ওই তিনজন টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা এসেছিল। তদন্তের অংশ হিসেবে তাদের ফ্লাইটবিষয়ক তথ্যের জন্য ডিবি টার্কিশ এয়ারলাইনসের সহযোগিতা চায়। কিন্তু টার্কিশ এয়ারলাইনসের কালক্ষেপণের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঈদের ছুটির মধ্যে ঢাকা ছেড়ে মালয়েশিয়া চলে যায় শেরি, রোমান ও দিমিত্রি নামে ওই তিনজন। ঢাকায় তারা উত্তরার অ্যারোলিংক হোটেলে অবস্থান করেছিল বলে জানা গেছে।

পুলিশের ধারণা, সেখান থেকেই এই তিন অপরাধী এটিএম বুথে ডিজিটাল জালিয়াতিতে সক্রিয় হয়েছিল। পরে চক্রের ছয় সদস্য গ্রেপ্তার হলে নিজেদের বাঁচাতে তারা পালিয়ে যায়।

এর মধ্যে এটিএম বুথ থেকে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ইউক্রেনের ছয় নাগরিকের প্রথম দফার তিন দিনের রিমান্ড গত শনিবার শেষ হয়। সেদিনই তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ইয়াসমিন আরা তাদের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই বিদেশিদের ডিজিটাল জালিয়াতির মুহূর্তে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সিসিটিভির ফুটেজ দেখানো হয়। কিন্তু তারা সেটি ভুয়া দাবি করেছে। আসামিদের দাবি, তারা বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিল। যদিও কোন কোন স্থানে তারা ঘোরার পরিকল্পনা করেছিল সে সম্পর্কে কেউই কোনো তথ্য দিতে পারেনি। এমনকি তাদের কাছে থাকা বুথ থেকে টাকা তোলার কার্ডগুলোর বিষয়ে গ্রেপ্তারকৃতরা মুখ খুলছে না। ইতালির একটি নাইটক্লাবে তারা এসব কার্ড কুড়িয়ে পেয়েছে বলে দাবি করেছে।

ডিবি কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ছয় বিদেশি ডিজিটাল জালিয়াতির বিষয়টি অস্বীকার করতে গিয়ে অনেক অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ ছাড়া ঘটনার ভিডিও ফুটেজের ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলে জালিয়াত চক্রের অস্বীকার করার কোনো সুযোগ থাকবে না। একই সঙ্গে ইউক্রেনের এই চক্র বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় লেজারস চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা সে বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহিদুর রহমান বলেন, প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে আসামিরা। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখা থেকে চলতি মাসের গত ১৫ দিনে কতজন ইউক্রেনের নাগরিক দেশে এসেছে সে তথ্য সংগ্রহ করেছে ডিবি। তাতে দেখা গেছে, ওই সময়ের মধ্যে ১৭৩ জন ইউক্রেন নাগরিক ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। তাদের মধ্যে ৭৪ জন ইতোমধ্যে ঢাকা ছেড়েছে।

এই চক্রটি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ৯টি এটিএম বুথ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকার বেশি বা কিছু কম পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ব্যাংকটি। এ কাজে তারা টুপকিন ম্যালওয়ার ব্যবহার করেছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ব্যাংকের এটিএম বুথ কম্প্রোমাইজ করেই তারা টাকা উত্তোলন করেছে। এ ছাড়া বিশেষ কায়দায় বুথ হ্যাক করে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলেও মত দিয়েছেন প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষরা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877